প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে প্রতিদিন মৃতের সংখ্যা বাড়ছে বিশ্বে। একের পর এক ঢেউয়ে আক্রান্ত হচ্ছে দেশগুলো। ভাইরাসটির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে বিজ্ঞানীরা স্বল্পতম সময়ের মধ্যে টিকা আবিষ্কার করলেও করোনাকে দমানো যাচ্ছে না। প্রতিনিয়তই নিজেকে রূপান্তরিত করছে কভিড-১৯। বিজ্ঞানীদের মতে, এ পর্যন্ত ১৩ হাজার বারের বেশিবার ভাইরাসটি রূপান্তরিত হয়েছে। এ রূপান্তরের মধ্যে ক্রমেই আক্রান্ত হওয়ার উগসর্গও পাল্টাচ্ছে। গত এক বছরে করোনায় আক্রান্ত হওয়ার উপসর্গ হিসেবে যে যে ঘটনাকে বিবেচনায় আনা হচ্ছিল, তার চেয়েও বেশি উপসর্গ এখন দেখা দিচ্ছে। প্রথমত, জ¦র, ক্লান্তি এবং ঘ্রাণশক্তি কমে যাওয়াকে করোনার উপসর্গ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। কিন্তু সম্প্রতি বিজ্ঞানীরা বলেছেন, করোনায় আক্রান্ত হওয়ার কারণে অনেকের মধ্যে কানে কম শোনা, চোখে রক্ত উঠে যাওয়া, গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দেখা দিচ্ছে। চীনের এক গবেষণা অনুসারে, চোখে রক্ত ওঠাকে করোনা সংক্রমণের উপসর্গ হিসেবে দেখা হচ্ছে। এর ফলে চোখ দিয়ে পানি পড়ে। করোনার নতুন ধরনে আক্রান্তদের মধ্যে এ উপসর্গগুলো দেখা যাচ্ছে। পরীক্ষার জন্য যে কয়েকজন আক্রান্তকে পর্যবেক্ষণের মধ্যে আনা হয়, তাদের মধ্যে ৯৯ শতাংশের চোখেই অতিরিক্ত রক্ত উঠে যাওয়ার লক্ষণ দেখা যায়। বিজ্ঞানীরা বলছেন, চোখের মাধ্যমে করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ফুসফুসে পৌঁছে যাচ্ছে। তবে ভাইরাসের কারণে চোখের দৃষ্টিশক্তি কমে যাচ্ছে কি না সে বিষয়ে এখনো কিছু বলতে পারেননি বিজ্ঞানীরা।
কানে কম শোনা বা অবিরাম রিং বাজার শব্দ শোনাকেও করোনার নতুন উপসর্গ ধরা হচ্ছে। এমন উপসর্গ কারও শরীরে প্রকাশ পেলে ধরতে হবে তার সংক্রমণ বেশ জোরালো। ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অব আডিওলজিতে প্রকাশিত এক গবেষণায় বলা হয়, করোনাভাইরাস মানুষের শ্রবণেন্দ্রিয়কে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। এক অথবা দুই কানেই কম শোনা বা অবিরাম রিং বাজার মতো শব্দ হতে থাকে। এমন শব্দ হতে থাকলে আক্রান্ত ব্যক্তিদের ব্যক্তিত্বে প্রভাবের পাশাপাশি অন্যান্য সমস্যার সৃষ্টি হতে থাকে। অনেকের আবার স্বল্পমেয়াদে শ্রবণশক্তি নষ্টও হয়ে যাচ্ছে। নতুন ধরনে আক্রান্তদের মধ্যে ৭ দশমিক ৬ শতাংশ মানুষের দেহে এ উপসর্গ দেখা যাচ্ছে।
নতুন ধরনে শরীরের উচ্চ শ্বাসযন্ত্রকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। এর ফলে অনেক আক্রান্ত ব্যক্তিই গ্যাস্ট্রিকের সমস্যায় ভুগছেন। কিছু ক্ষেত্রে আক্রান্ত ব্যক্তিদের ডায়রিয়া এবং বমির ঘটনা ঘটছে। এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনার এ সময়ে ডায়রিয়া ও বমিকে হালকা হিসেবে দেখার সুযোগ নেই। ভাইরাসটি যেহেতু কিডনিকে আক্রান্ত করে ফলে লিভারকেও আক্রান্ত করতে পারে। আর লিভার আক্রান্ত হলে বমির ঘটনা স্বাভাবিকভাবে ঘটবেই।